যীশুখ্রিস্ট কে সেটা নতুন করে বলার দরকার নেই। যীশুখিস্টকে মুসলমানেরা হযরত ঈসা (আঃ) নামে চিনে। তবে যীশুখ্রিস্ট বা ঈসা (আঃ)-এর জীবনী নিয়ে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে কিছু মতবিরোধ আছে। এখানে আমরা খ্রিস্টানদের মতামত অনুসারে আলোকপাত করবো। অন্যদিকে, গ্রীক মিথোলজি অনুসারে হারকিউলিস হলেন দেবরাজ জিউসের এক পুত্র, যার জন্ম হয়েছিল কোনো এক মানবীর গর্ভে। তাহলে জেনে রাখুন, যীশুখ্রিস্ট ও হারকিউলিসের মধ্যকার মিলসমূহঃ
(১) দু’জনই বলতে গেলে ঈশ্বরের পুত্র। খ্রিস্ট ধর্মমতে, কুমারী মাতা মেরীর গর্ভে স্বয়ং ঈশ্বরের পুত্র যীশুর জন্ম হয়। আর গ্রীক পুরাকথা অনুসারে, দেবরাজ জিউস ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দেবতা বা দেবতাদের রাজা; সুতরাং ঈশ্বর হিসেবে একজনকে বেছে নিতে বলা হলে, সর্বপ্রথমেই আসবে দেবরাজ জিউসের নাম, সেই অর্থে হারকিউলিসও ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন।
(২) দু’জনেই আর্ত-মানবতার কল্যাণে আজীবন নিয়োজিত ছিলেন।
(৩) দু’জনের জীবনই অনেক সংগ্রামের ছিল; দুঃখ-কষ্ট, অভাব-বঞ্চনার মধ্য দিয়ে কেটেছে।
(৪) দুজনেই তাদের জীবদ্দশায় ‘জারজ’ তকমা ধারণ করেন। কুমারী মাতা মেরীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করায় যীশুখ্রিস্ট শৈশব থেকেই ‘জারজ’ উপাধি লাভ করেন। আর, হারকিউলিস আসলেই দেবতা জিউসের অবৈধ সন্তান ছিলেন।
(৫) দু’জনেরই যুবক বয়সে মর্ত্য-জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। এর মধ্যে হারকিউলিস স্বেচ্ছায় আত্মাহুতি দেন, আর এক কুচক্রীর ষড়যন্ত্রে যীশুর জীবনাবসান ঘটে।
(৬) দু’জনেই আগে থেকে সম্ভাব্য মৃত্যুর ব্যাপারে জানতেন। হারকিউলিস যখন ১২টি অসাধ্য কাজ সাধন করেও মনের শান্তি পেলেন না পুরনো একটি দুর্ঘটনার স্মৃতি মনে করে (সৎ মাতা হেরার কালো-জাদুর কারণে এক রাতে তার মাথা বিগড়ে যায় এবং নিজের স্ত্রী-সন্তানদেরকে শত্রু বিবেচনা করে হত্যা করেন), তখন তিনি আত্মাহুতির মাধ্যমে নিজের সব জ্বালা-কষ্ট অবসানের সিদ্ধান্ত নিলেন। আর যীশুখ্রিষ্ট জানতেন যে, তাঁর ১২ সাহাবীর মধ্যে এক বিশ্বাসঘাতক তাঁকে রোমানদের হাতে ধরিয়ে দেবে।
(৭) দু’জনেই স্ব-স্ব পিতার কাছে অমর হিসেবে প্রত্যাবর্তণ করেন। দেবরাজ জিউস যখন দেখতে পেলেন যে, তাঁর পুত্র হারকিউলিস একজন সত্যিকারের বীর এবং সে তার মর্ত্যের জীবনে বহু ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে, তখন পুত্রের প্রতি তাঁর দয়া হয়। তাই চিতার আগুনে জ্বলে হারকিউলিস যখন আত্মাহুতি দিলেন, তখন অনতিবিলম্বে জিউস তাকে পুনরুজ্জীবিত করেন এবং অমরত্ব প্রদান করে স্বর্গে নিজের কাছে আশ্রয় দেন। আর যীশুখ্রিস্ট কীভাবে অমর হলেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। মৃত্যুর দুই দিন পর ইস্টার সানডেতে তাঁর পুনরুত্থান ঘটে (ঈশ্বরই এই পুনরুত্থান ঘটান)। তখন যীশু মানব সম্প্রদায়ের কাছে সাময়িকের জন্য আবারো ফিরে আসেন এবং আরো কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়ে যান।
আসুন, আমরা এই দুই মহাপুরুষের জন্য অন্তর থেকে প্রার্থনা করি।
Pingback: আমার অ্যাকশন রোল মডেল - হারকিউলিস (Herculis) - INFORMATION N KNOWLEDGE WORTH SHARING