রাকুল প্রীত সিং-কে বেশিরভাগ লোক হয়তো ‘ইয়ারিয়া’ ছবির মাধ্যমে চিনেন। এটি বলিউড ছবি এবং ২০১৪ সালে মুক্তি পায়। ছবিটির ‘এ ফর আও রে আও’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। শোনা যায়, ২০১৪ সালের নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের সব পার্টিতে এই গানটিই বেশিরভাগ সময় বাজানো হয়েছে। ছবিটির শুরুতে রাকুলকে চশমাওয়ালনি একজন ‘গিক’ বা অাঁতেল হিসেবে দেখা গেলেও পরবর্তীতে তাঁর গ্ল্যামারাস লুক সবার নজর কাঁড়ে। হিমাংশ কোহলির সাথে তাঁর রোমান্টিক গান ‘বারিশ’ সবার ভালো লেগেছে। রাকুলের লম্বা স্লিম ফিগার আর অতুলনীয় চেহারা দেখার মতো বটে। তবে অভিনয় দক্ষতায় হয়তো সামান্য পিছিয়ে আছেন তিনি, তাই আলিয়া ভাট আর পারীনিতি চোপড়াদের মতো আলোচনায় খুব একটা আসতেন পারছেন না।
এর পেছনে অন্য একটি কারণও অবশ্য আছে, আর তা হলো ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড। আলিয়া যেমন তাঁর বিখ্যাত পিতা মহেশ ভাট এবং পারীনিতি তাঁর কাজিন সিস্টার প্রিয়াংকার প্রভাব কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছেন, রাকুলের তেমন কেউ নেই; আজ পর্যন্ত যা করেছেন সবটাই তাঁর নিজের প্রতিভার জোরে। যাই হোক, যে রাকুলকে নিয়ে আজকের এই আর্টিক্যাল তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে শুরু করা যাক গঠনমূলক আলোচনা।
প্রিয়াংকা চোপড়া আর আনুশকা শর্মার মতো রাকুলের পিতাও ইন্ডিয়ান আর্মির অফিসার ছিলেন। আর তাই সেনা পিতার ন্যায় রাকুলের উচ্চতাও ব্যাপক, প্রায় ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। তিনি ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন, সে হিসেবে তিনি তুলা রাশির জাতিকা এবং বয়স প্রায় ২৮ বছর। তবে বর্তমানে তাঁর বাড়ি তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দ্রাবাদে। তিনি গণিতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেছেন। উক্ত ডিগ্রী লাভের জন্য তিনি দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ‘জিউজেস এন্ড মেরি কলেজ’-এ অধ্যয়ন করেন। তিনি পেশায় মূলতঃ একজন অভিনেত্রী এবং মডেল। তিনি ২০০৯ সালে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। নামের শেষে ‘সিং’ থাকায় নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন তিনি একটি ‘পাঞ্জাবী’ পরিবারের সদস্য। রাকুল ঢাউলা কুয়ানে অবস্থিত ‘আর্মি পাবলিক স্কুল’-এ পড়াশুনা করেছিলেন।
রাকুল মূলতঃ তেলেগু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। [আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, তেলেগু হলো ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা রাজ্যের মাতৃভাষা। রাজ্য দু’টি পাশাপাশি অবস্থিত, আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে তেলেঙ্গানা আগে অন্ধ্রপ্রদেশের অংশ ছিল।] তবে তিনি বেশ কয়েকটি তামিল, হিন্দী এবং কান্নাডা ছবিতেও অভিনয় করেছেন। বর্তমানে তিনি তেলেঙ্গানা রাজ্যের ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রোগ্রামের অ্যাম্বাস্যাডর বা শুভেচ্ছাদূত। এই প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য হলো কন্যা সন্তানের প্রতি পিতামাতার দরদ ও সচেতনতা বাড়ানো।
রাকুল প্রীত সিং জানিয়েছেন, তিনি নাকি সর্বদাই একজন অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর বয়স যখন মাত্র ১৮ বছর, অর্থাৎ যখন তিনি কলেজে পড়েন, তখনই মডেলিং-এর মাধ্যমে তিনি ক্যারিয়ার জীবনের সূচনা করেন। ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কান্নাডা ছবি ‘গিল্লি’র মাধ্যমে তিনি অভিনয়ে অভিষেক করেন। এ ছবিতে তাঁর অভিনয়ের উদ্দেশ্য ছিল ‘কিছুটা অতিরিক্ত পকেট মানি’ জোগাড় করা, তাঁর প্রকৃতপক্ষে কোনো ধারণাই ছিল না, দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি কত বড় আর কত ‘বিগ বাজেট’ নিয়ে কাজ করে!