হলটার নাম হলো নজরুল ইসলাম হল। সেখানে ২০০১ সালের মার্চ/এপ্রিল মাসের দিকে সিট নিয়ে উঠি ২৩২ নম্বর রুমে। জানতাম না যে, সেটা একটা পলিটিকাল রুম। রুমের মালিক ছিলেন ‘৯৫ ব্যাচের মেকানিক্যালের জানে আলম ভাই, তিনি চিটাগাং এর বাসিন্দা। আর তাঁর সাগরেদ ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল এর ‘৯৮ ব্যাচের নয়ন আব্দুল্লাহ ভাই (বরিশালের বাসিন্দা)।
আমি যখন উঠি, তখন রুমে জানে আলম ভাই ছিলেন না। আর নয়ন ভাই কোনো আপত্তি করার সাহস পান নি (সম্ভবত)। তাই আমি সরল মনেই কোনো সাত-পাঁচ না ভেবেই সেখানে উঠি, কোনো ঝামেলা হবে – এরকম ভাবি নি। জানে আলম ভাই যখন বেড়ানো থেকে ফিরলেন, তখন তিনি আমাকে দেখে কিছুটা বিরক্ত হয়েছিলেন ঠিকই, তবে আমি কিছুদিনের মধ্যেই তাদের সাথে মিশতে ও সহজ হয়ে যেতে সক্ষম হই।
কিন্তু সমস্যা ছিল অন্য জায়গায়। যেহেতু আমার ফ্যামিলি (বাবা, মা, ভাইয়েরা) রামপুরায় থাকতেন, তাই আমি হলে নিয়মিত ছিলাম না। প্রতি সপ্তাহেই দু-একদিন করে সেখানে গিয়ে থেকে আসতাম। এটা বোধ হয় ভালো চোখে দেখতেন না রুমমেটরা এবং আশপাশের লোকজন।
যেটা নিয়ে কানাঘুষা শুরু হলো সেটা হচ্ছে, ঐ রুম এবং তার আশপাশের রুম থেকে নাকি প্রায়ই জিনিসপত্র (যেমন, ক্যালকুলেটর) চুরি যেত। চুরির ব্যাপারে শুনলেও তাঁরা যে আমাকে সন্দেহ করতেন, সেটা প্রথমে আমি বুঝতে পারি নি। পরে যখন ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম, খুবই মর্মাহত হলাম।
এক পর্যায়ে জানে আলম ভাই বিরক্ত হয়ে আমাকে সরাসরি বলে বসলেন, ‘তুমি যখন রুমে উঠছিলা, তখন কি আমার পারমিশন নিছিলা? নেও নাই তো! তাহলে এখন এই রুম থেকে চলে যাবা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই’। এটা শুনে আমি এতোই অপমানবোধ করেছিলাম যে, কিছুদিনের মধ্যে কেবল রুম থেকে নয়, বরং অন্য একজনের সাথে হল ইন্টারচেঞ্জের সুযোগ পেয়ে হল ছেড়েই চলে গিয়েছিলাম। উল্লেখ্য যে, জানে আলম ভাই তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্ররাজনীতি করতেন।