অনেক তরুণ-তরুণীর নানা অসুখ-বিসুখের উপায় হতে পারে বিয়ে। কারণ স্বামী-স্ত্রীর শারীরিক সম্পর্ক উভয়ের জন্যই সুফল বয়ে আনে।
শারীরিক সম্পর্ক মানসিক চাপ কমানো, হৃদযন্ত্র ভালো রাখা, নারীর মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন রোগের নিরাময় পাওয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েবএমডি এবং ম্যান’সে হেলথ।
আসুন জেনে নেই শারীরিক সম্পর্ক কী ধরনের সুফল আছে।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক দম্পতির রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেনসেলভেনিয়ার উইল্কস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও দেখান যে, যেসব শিক্ষার্থী সপ্তাহে এক বা দুদিন যৌনমিলনে লিপ্ত হন তাদের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা যারা এর চেয়ে কম ‘সেক্স’ করেন তাদের তুলনায় বেশি।
মিলিত হওয়ার ইচ্ছাশক্তি বাড়ায়
নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক একে অপরের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। বিশেষ করে নারীদের যোনিপথ পিচ্ছিল রাখতে, সেখানে রক্তচলাচল বাড়াতে এবং নমনীয়তা ঠিক রাখতে নিয়মিত যৌনজীবনের বিকল্প নেই, মনে করেন শিকাগোর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লওরেন স্ট্রাইচার।
নারীর মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
নারীর মূত্রাশয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে ‘পেলভিক ফ্লোর’ শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। আর ভালো যৌনজীবন নারীর মূত্রাশয়ের মাংসপেশিকে সক্রিয় রাখে। বিশেষ করে ‘অরগ্যাসমের’ সময় ‘পেলভিক ফ্লোরের’ মাংসপেশি সংকুচিত হয়, যা একটি ভালো ব্যায়ামও বটে। জেনে রাখা ভালো, প্রায় ৩০ শতাংশ নারীর কোনো না কোনো সময় মূত্রাশয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
রক্তচাপ কমায়
নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কের ফলে রক্তচাপ কম থাকার একটি সম্পর্ক রয়েছে মনে করেন গবেষক জোসেফ জে. পিনসন। তিনি জানান, গবেষণা বলছে, শারীরিক সম্পর্ক রক্তচাপ কমায়।
ব্যায়াম
নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক একটা ভালো ব্যায়াম, বলেন পিনসন। কেননা এতে প্রতি মিনিটে পাঁচটি ক্যালোরি খরচ হয়, যা টিভি দেখার চেয়ে চার ক্যালোরি বেশি। তিনি জানান, শারীরিক মিলনে দু’ধরনের সুবিধা মেলে। এটি আপনার হৃদকম্পনে গতি আনে এবং একই সঙ্গে অনেক মাংসপেশিকে সক্রিয় করে।
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়
শারীরিক সম্পর্ক আপনার হৃৎপিণ্ডের জন্যও ভালো। হার্ট রেট ভালো রাখার পাশাপাশি এটি আপনার ‘এস্ট্রোজেন’ এবং ‘টেস্টোস্টেরনের’ মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। গবেষণা বলছে, যারা সপ্তাহে অন্তত দু’দিন শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন তাদের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর শঙ্কা কম।
ব্যথা কমায়
ব্যথা কমাতে অ্যাসপিরিনের চেয়ে ‘অরগ্যাসম’ বেশি কার্যকর হতে পারে। নিউ জার্সি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেরি আর. কমিসারুক বলেন, ‘‘অরগ্যাসম ব্যথা বন্ধ করতে পারে। কেননা এতে যে হরমোন নিঃসৃত হয়, তা শরীরের ব্যথা প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
যেসব পুরুষের মাসে অন্তত ২১ বার ‘ইজেকুলেট’ হয় তাদের প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় কম, এক গবেষণায় এই হিসেবে শুধু যৌনমিলন নয়, হস্তমৈথুনও অন্তর্ভুক্ত। তবে শুধু ‘সেক্স’ করলেই ক্যানসারমুক্ত থাকা যাবে কিনা, তা অবশ্য পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। প্রোস্টেট ক্যানসারের পেছনে আরও অনেক কারণ থাকে।
ঘুমে সহায়ক
শারীরিক সম্পর্কের পর আপনি দ্রুত ঘুমাতে পারেন। কেননা ‘অরগ্যাসমের’ সময় যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা দেহকে শিথিল করে এবং ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে আসে।
মানসিক চাপ কমায়
আপনার সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে থাকলে আপনার মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমতে পারে। গবেষকরা মনে করেন, সুস্থ জীবনের জন্য শারীরিক ঘনিষ্ঠতা অত্যন্ত জরুরি।