সরকার ও জনগণের কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে দেশে করোনাকাল বোধ হয় শেষের দিকে। সরকার করোনা টেস্টের সংখ্যা কমিয়ে দেয়ায় নতুন সনাক্তের সংখ্যা কমেছে। এতে অনেকের আশা জেগেছে যে, দেশে করোনার ক্রান্তিকাল হয়তো শেষের দিকে। সেটা হলে আমিও খুশি হতাম। তবে দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা – করোনা সংক্রমণ কমাতে হলে যেকোনো দেশের অধিবাসীকে বেশকিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যেগুলোর পরোয়া বাংলাদেশের লোকজন কখনোই করেনি। সুতরাং দেশে করোনার সংক্রমণ কমবে কেন? তবে কালোবাজারিদের ধারণা হয়েছে, দেশে করোনার ভয়াবহতা শেষের দিকে, তাই তারা তাদের স্টককৃত মালামাল বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে মাস্ক। সার্জিক্যাল মাস্ক কিছুদিন আগ পর্যন্ত ছিল ২০ টাকা পিছ, সেটা এখন ৫ টাকা পিছ। আর আজ এক অনলাইন শপে দেখলাম ৩ টাকা করে পিছ। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এদের মনোভাব কেমন। সরকারও মনে করছে, করোনা শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে, তাই তারা এখনো ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নি।
সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরে বসে আছে এমন এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাই বললেই চলে। তাই সরকার এখন তাদের পরীক্ষাটা নিলেই পারে। প্রথম আলোর রিপোর্টে আজকে এসেছে, পরীক্ষার্থীরা নাকি সব পড়াশুনা ভুলে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ হ্রাস পাবে তেজস্ক্রিয় পদার্থের গ্রাফের মতো, পুরোপুরি ভ্যানিশ হতে অনেক সময় লাগবে। এতোদিন শিক্ষার্থীদের মনমানসিকতা নিয়ে খেলার অধিকার কার আছে? প্রয়োজনে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা দ্বিগুণ-তিনগুণ করা হোক। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া চার-পাঁচ হাজার করোনা রোগীর জন্য সরকার শত কোটি টাকা ব্যয় করতে পারলে শিক্ষাখাতে টাকা ঢালবে না কেন?
এবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদত্যাগ সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। সেটা হলো – কেউ পদত্যাগ করলে তাকে যদি এতো পঁচানো হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে না, বোকা বাঙালী এই সহজ জিনিসটা বোঝে না।
যেখানে দেশবাসীর এখন বলা উচিত, ‘এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই’, সেখানে তারা বলছে, ‘মহাপরিচালক ব্যাটা খুবই খারাপ ছিল, তার বিরুদ্ধে কয়েকটা মামলা দেয়া হোক’। সে যে বলির পাঠা সেটা জনগণ বুঝতে পারছে না কেন?!