যদিও বর্তমান পৃথিবীতে এমন বেশ কয়েকটি রোগ (যেমনঃ ডায়াবেটিস) আছে যেগুলোতে মৃত্যুর হার এইডসের চেয়ে বেশি, তারপরও এইডসে মৃত্যুর ব্যাপারটি যে অন্য যেকোনো রোগের চেয়ে ভয়াবহ এবং লজ্জাজনক – সেটা মনে রাখতে হবে। তাই চলুন আজ জেনে নেই বিশ্বের কোন প্রান্তে এইডস বা এইচআইভি’র সংক্রমণ কী পর্যায়ের।
আফ্রিকা
এই মহাদেশে এইডসের প্রকোপ খুব বেশি। এখানে বিবাহবহির্ভূত যৌন মিলন এবং বহুবিবাহের প্রথা খুব বেশি, প্লাস এখানে অন্য যেকোনো অসুখের মতো এইডসের বিষয়ে সচেতনতা কম। রোগটি কীভাবে ছড়ায় এবং এটিকে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় – সে সম্পর্কে মোটামুটি অজ্ঞ এখানকার লোকেরা। যৌনমিলনের সময় নিরোধক (কনডম) ব্যবহারের প্রবণতাও এখানে খুবই কম। এইডসের কারণে আফ্রিকার মানুষের গড় আয়ু খুবই কম। এখানে এরকম বহু শিশু আছে, যাদের পিতামাতা এইডসের কারণে মারা গেছে এবং তারা নিজেরাও এই মরণব্যধিতে আক্রান্ত। একবার চিন্তা করুন, কথা বলতে শেখার পরেই কোনো শিশু যদি শোনে যে, সে আর বেশিদিন বাঁচবে না, তখন তার কেমন লাগে।
ভারত ও সিঙ্গাপুর
আফ্রিকার পরেই ভারত ও সিঙ্গাপুরে এইডসের সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। সিঙ্গাপুরের লোকজন ক্যারিয়ার অরিয়েন্টেড এবং তারা বিয়ে করতে চায় না। ফলে তারা লিভ টুগেদার করে থাকে এবং ঘনঘন যৌনসঙ্গী বদলায়, একারণে এখানে এইডসের প্রকোপ অত্যন্ত বেশি। আর ভারতে বহুগামিতা, পরকীয়া এবং পতিতালয়ে গমনের প্রবণতা খুব বেশি। এখানে বেশিরভাগ পুরুষই যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করতে চায় না। এছাড়া সাধারণ লোকজন তথা প্রশাসনের মধ্যে এমন একটি ধারণা আছে যে, উন্নয়নের জন্য যৌন স্বাধীনতা দরকার। ভারতেও এইচআইভি সম্পর্কে জনসচেতনতা কম। আগে এইচআইভি সম্পর্কে পাবলিক মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো হলেও এখন সেই উদ্যোগ অনেকটা স্তিমিত হয়ে গেছে।
চায়না ও এশিয়ার অন্যান্য দেশ
চায়না থেকে বাইরে কোনো তথ্য পাচার করা কষ্টকর। তারপরও জানা গেছে যে, সেখানে এইডসের প্রকোপ রয়েছে, তবে সেটা ভারত বা সিঙ্গাপুরের মতো ব্যাপক নয়। জাপানের লোকজনের মাঝে যৌনক্রিয়ায় আগ্রহ কম, তাই সেখানে এইচআইভির ঝুঁকি কম হওয়ার কথা। তবে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, মায়ানমার – এ সকল দেশে এইচআইভির হার চায়নার মতো হওয়ার কথা। মালেশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া মুসলিম দেশ হওয়ায় সেখানে এইডসের হার তুলনামূলকভাবে কম।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহ
মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব ও ইরান – এ দুটি দেশে এইচআইভির ঝুঁকি কম। এর কারণ হলো সৌদি আরবে অবৈধ যৌন সম্পর্ক গুরুতর অপরাধ এবং একাজে লিপ্ত কাউকে পাওয়া গেলে তার মৃত্যুদণ্ড অবধারিত। আর ইরানে ভিনদেশী লোকের সংখ্যা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। তবে মধ্যপ্রাচ্যের যে সকল দেশে বিদেশী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি এবং সেক্স ব্যবসা জমজমাট, সেখানে এইডসের হারও বেশি। একারণে সংযুক্ত আরব আমীরাত থেকে প্রতি বছর অসংখ্য বিদেশী শ্রমিক এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়ে নিজ দেশে ফেরত যায়।
আমেরিকা ও ইউরোপ
উন্নত বিশ্বে এইচআইভির হার খুবই কম। সেখানে যে অবাধ যৌনমিলন চলে না, তা নয়। তবে সেখানের মানুষ এসকল বিষয়ে খুবই সচেতন। আর তারা খুবই বেছে বেছে যৌনসঙ্গী নির্বাচন করে, সেখানে পতিতাবৃত্তির হার খুবই কম। সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক হলো, সেখানে এইডসের হার দিনদিন কমছে।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এইচআইভির হার কম, তবে আমাদের কিছু বোকামির জন্য দেশে এইডসের হার বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হলো, দেশে বিয়ের পূর্বে রক্ত পরীক্ষা করা হয় না এবং ভারতে নারীপাচার রোধ করা যাচ্ছে না। এছাড়া দেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক-পারিবারিক পরিবেশের অবক্ষয়ের কারণে তরুণ সমাজ সিরিঞ্জভিত্তিক নেশার দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। তার উপর, শ্রমিক সম্প্রদায়ের একটি অংশ পতিতাদের সাথে যৌনমিলনের সময় কনডম ব্যবহার করে না। এছাড়া, ভারতের দেখাদেখি বাংলাদেশেও পরকীয়া ও লিভ টুগেদারের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। তরুণ-তরুণীরা প্রেমের নামে ঘনঘন যৌনসঙ্গী বদলাচ্ছে। নতুন সঙ্গী বাছাইয়ের সময় তার যৌনবাহিত রোগ আছে কিনা যাচাই করছে না।
ঢাকা এবং এর চারপাশে শুধু দূষণ আর দূষণ
Visit and subscribe to our YouTube channel:
https://www.youtube.com/channel/UC_ea40zKSAhep0MI23VQx0g
Pingback: প্রকৃত স্বাদ পাই যখন আমার বয়স ২১ : সানি লিওন – INFORMATION N KNOWLEDGE WORTH SHARING