কারিনা কাপুর জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ তিনি তুলা রাশির জাতিকা এবং তাঁর বর্তমান বয়স প্রায় ৩৮ বছর। বিয়ের পর তিনি তাঁর স্বামী সাইফ আলী খানের পদবী গ্রহণ করে বর্তমানে কারিনা কাপুর খান নামে পরিচিত। তিনি বলিউডের অভিনেতা রন্ধীর কাপুর ও অভিনেত্রী ববিতার কন্যা এবং অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের ছোট বোন। কারিনা এখন পর্যন্ত ছয়টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসহ বহু পুরষ্কার লাভ করেছেন।
তিনি বলিউডের চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন ২০০০ সালে ‘রিফিউজি’ ছবির মাধ্যমে। এটি খুব একটা জনপ্রিয় না হলে ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অশোকা ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয় এবং একই সালে মুক্তি পাওয়া কাভি খুশি কাভি গম ছবিটি যথেষ্ট ব্যবসা করে। এতে করে কারিনা কাপুর লাইম লাইটে চলে আসেন। তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথমদিকের চলচ্চিত্রগুলোয় তাঁর অভিনয় কিছুটা একঘেঁয়ে টাইপের ছিল। যেমনঃ মুঝে কুছ ক্যাহনা হ্যায় এবং কাভি খুশি কাভি গম ছবিদ্বয়ে তাঁকে ‘বাবলী’ ঘরানার কলেজছাত্রী হিসেবে দেখা গেছে। এই ধরনের ইমেজ ভাঙার জন্য কারিনা মরিয়া হয়ে উঠেন এবং ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘চামেলী’ ছবিতে এক পতিতার চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর এই রোলটি কিছুটা বিতর্ক সৃষ্টি করলেও বেশিরভাগ সমালোচক তা প্রশংসা করেছে।
কারিনা তাঁর বর্তমান স্বামী সাইফকে পার্শ্বঅভিনেতা হিসেবে প্রথমবার পান ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওমকারা’ ছবিতে। তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিক ছিলেন শহিদ কাপুর। কারিনা শহিদকে নায়ক হিসেবে পান ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জব উই মেট’ ছবিতে। এর পর থেকেই বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁদের প্রেম চলতে থাকে। এ জুটির ভালোবাসা এক পর্যায়ে এতই গভীর হয়েছিল যে, কারিনা শহিদকে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট উপহার দেন। কারিনা কাপুর অভিনীত ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘থ্রি ইডিয়ট্স্’ এবং ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছবি দু’টি মোট আয়ের পরিমাণ বিবেচনায় বলিউডের বক্স অফিসের আগের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়।
সাইফের সংসারে কারিনার একটি পুত্রসন্তান রয়েছে, নাম তৈমুর আলী খান। কারিনা তাঁর পুত্রকে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি স্নেহ করেন। তাঁর ও সাইফের সংসার নিয়ে মিডিয়াতে অহরহ খবর চাউর হয়। কারিনা একটু মুখর স্বভাবের, অর্থাৎ তিনি তাঁর মনের কথা কোনোরকম রাখঢাক না রেখে সরাসরি বলে দিতে পছন্দ করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি প্রায়ই স্টেজ পারফর্ম করেন এবং এ পর্যন্ত তিনটি বই লিখেছেন। এর মধ্যে একটি হলো তাঁর আত্মজীবনীমূলক এবং বাকি দু’টি বই পুষ্টি নিয়ে।
কারিনা কাপুরের ডাকনাম হলো ‘বেবো’ এবং তাঁর বড়বোন কারিশমার ডাকনাম হলো ‘লোলো’। বলিউডের প্রবাদপ্রতীম অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজ কাপুরের ছেলের ঘরের নাতনী হলেন কারিনা। তিনি অভিনেতা রিশি কাপুরের ভাতিজি এবং রণবীর কাপুরের চাচাতো বোন। কারিনা যখন তাঁর মায়ের পেটে ছিলেন তখন তাঁর মা ববিতা ‘অ্যানা কারেনিনা’ নামক বিখ্যাত বইটি পড়েছিলেন। সেখান থেকেই ববিতা তাঁর দ্বিতীয় মেয়ের নামের আইডিয়াটা পান।
কারিনার আদি পূর্বপুরষের বাসস্থান ছিল পাকিস্তানে। নিকট অতীতের বিবেচনায় তাঁর দেহে পিতার দিক থেকে পাঞ্জাবী রক্ত এবং মায়ের দিক থেকে সিন্ধি ও ব্রিটিশ রক্ত রয়েছে। যদিও তিনি ছোটকাল থেকে হিন্দু ধর্ম পালন করেছেন, কিন্তু মায়ের সাহচর্যের দরুণ খ্রিস্টান ধর্মের কিছু রীতিনীতিও জানা আছে তাঁর।