গেল বছরের শেষ দিনে ‘আয়নাবাজি’খ্যাত অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা জানিয়েছিলেন ২০১৮ সালের এপ্রিলে বিয়ে করবেন তিনি। নাবিলার বর জোবাইদুল হক। যার কৈশোরের সময় কেটেছে জেদ্দায়। নাবিলারও জন্ম সৌদি আরবে। বাবার চাকরি সূত্রে তার কৈশোরের আনন্দময় দিনগুলোও কেটেছে জেদ্দা শহরে। সেখানেই নাবিলা এবং জোবাইদুল হকের পরিচয়।
এছাড়া একই স্কুলে দুজনে পড়তেন। নাবিলার ভাষ্য, ও আমার জীবনের প্রথম প্রেম। ১৮ বছর আগে যাকে ভালো লেগেছিল, কল্পনাও করিনি, এতদিন পর তাকেই বিয়ে করবো। পরিবার থেকেই আলোচনা করে বিয়ের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিয়ের তারিখ ও কেনাকাটা সম্পর্কে জানতে চাইলে নাবিলা বলেন, আসছে ২৬শে এপ্রিল বিয়ে করছি। এরই মধ্যে বিয়ের কেনাকাটা শেষের দিকে। সাজসজ্জার আশিভাগই দেশ থেকে কেনা হয়েছে। বাকিটা দেশের বাইরে থেকে কিনেছি। আমাদের দুজনের এবং পরিবারের সদস্যদের পছন্দে কেনাকাটা হচ্ছে। নতুন জীবনের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। এদিকে নাবিলা বর্তমানে ব্যস্ত রয়েছেন উপস্থাপনা নিয়ে। চলচ্চিত্রে অভিষেকের আগে তিনি উপস্থাপিকা হিসেবেই দর্শকের কাছে বেশ পরিচিতি পান।
এবার প্রথমবারের মতো তিনি সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘চ্যানেল আই প্রেজেন্টস লাক্স সুপার স্টার’ উপস্থাপনা করছেন। এ নিয়ে নাবিলা বেশ উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, সুন্দরীদের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করতে পেরে ভালো লাগছে। ‘দেখিয়ে দাও, অদেখা তোমায়’ এই স্লোগানে এবারের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। প্রতি বছরই এই প্রতিযোগিতা থেকে আমরা সুন্দরীদের পেয়ে থাকি। এবারো আমরা সেসব সুন্দরীকে পাবো যাদের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ। এদিকে সম্প্রতি নাবিলা ওপার বাংলার সংগীতশিল্পী অনুপম রায়ের গাওয়া ‘বাংলাদেশের মেয়ে’ শিরোনামের একটি গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হয়েছেন।
এটি নির্মাণ করেছেন শাহরিয়ার পলক। মিউজিক ভিডিওটি দর্শকের মধ্যেও বেশ সাড়া ফেলেছে। তবে এটি তার প্রথম এবং শেষ মিউজিক ভিডিও বলে মন্তব্য করেন এই গ্ল্যামারকন্যা।
নাবিলার ভাষ্য, আমার প্রিয় শিল্পীদের একজন অনুপম। তার ‘প্রাক্তন’ সিনেমার গানটি আমার প্রায়শই শোনা হয়। তার সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব পেয়ে না করতে পারিনি। অনুপমের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার কয়েকটি দিনের অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি, তিনি চমৎকার একজন মানুষ। ক্যামেরার সামনে একজন ভালো সহশিল্পী। শুটিংয়ের ফাঁকে তার পরিবারের গল্প শোনালেন, তার বাড়ির আতিথ্য নেয়ার অনুরোধও করেছেন। তিনি আমাদের বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য নিয়েও অনেক কিছু জানেন। ভালো লেগেছে তার আন্তরিকতা। আলাপনে নাবিলার চলচ্চিত্রে অভিনয় নিয়েও কথা হয়।
প্রথম ছবি ‘আয়নাবাজি’ সিনেমা হলে সব শ্রেণির দর্শককে ফেরাতে সক্ষম হয়। দর্শকের কাছে প্রশংসিত হওয়ার পরেও তাকে নতুন কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যাচ্ছে না। তবে কি তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ে আগ্রহী নন? এই সম্পর্কে নাবিলা বলেন, আমি চলচ্চিত্রে আগ্রহী নই-এটি ঠিক না। সত্যি বলতে ‘আয়নাবাজি’র মতো একটি ভালো ছবির অপেক্ষায় আছি। সেটি হতে পারে দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে-এমন যেকোনো চরিত্র। আমি মনে করি একটি ভালো কাজ একজন শিল্পীকে দর্শকের কাছে সব সময় বাঁচিয়ে রাখে। আমার প্রথম চলচ্চিত্র দিয়ে যে সুনাম অর্জন করেছি সেটি নষ্ট করতে চাই না। তবে চলচ্চিত্রে উপস্থিতি না থাকলেও নাবিলা ছোট পর্দায় রয়েছেন। গেল ভালোবাসা দিবসে তার অভিনীত ‘সংসার’ নাটকটি দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পায়।
এটিতে তিনি জুটি বাঁধেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা অপূর্বর সঙ্গে। নাটকটি নির্মাণ করেন মিজানুর রহমান আরিয়ান। আসছে ঈদের নাটকেও তাকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান নাবিলা। ছোট পর্দায় অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশেষ দিবসের নাটক-টেলিছবিতে নিয়মিত অভিনয় করতে চাই। তবে সেটির সংখ্যা বেশি হবে না। একান্ত ভালো লাগার গল্প ও চরিত্রে কাজ করবো। আমাদের ছোট পর্দার নাটক-টেলিছবির নির্মাণশৈলীতে এখন অনেক নতুনত্ব এসেছে। ভালো গল্প-চরিত্রে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করা যায় বলে আমি মনে করি। উৎস: মানবজমিন।